Friday, April 26, 2019

Iftarer 7 Tips ইফতার সংক্রান্ত ৭টি টিপস যা আপনাকে কর্মদ্দীপ্ত রাখবে

রহমান রহীম আল্লাহ্‌ তায়ালার নামে- 
অনুবাদ: হামিদা মুবাশ্বেরা
সঠিক ধরনের খাবার দিয়ে রোযা ভঙ্গ করা আপনার শরীরকে সুস্থ ও বলবান রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  কিছু মানুষ আছেন যারা সুবিধার জন্য ইফতারের সময় ফাস্ট ফুড খেয়ে ফেলে, আবার কেউ কেউ আছেন যারা অসংখ্য রকমারি ধরণের খাবার দিয়ে পেট ভরানোর চেষ্টা করেন যাতে সারাদিনের না খেয়ে থাকাটা পুষিয়ে নেয়া যায়। প্রথমটি যেমন শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর, ভালোর চেয়ে খারাপ বেশী করে, ধুমিয়ে খাওয়া খাওয়ির পরের বিকল্পটিও শরীর ও মনের উপর কুপ্রভাব ফেলে। আমাদের শরীরকে সঠিক ধরণের খাবার দিয়ে পরিপুষ্ট করা জরুরী, সাথে এটাও নিশ্চিত করা উচি যে ইফতারের সময় ভোজোসবে মেতে উঠে আমরা যেন বেশী খেয়ে না ফেলি। 
তাই এখানে ইফতারের সময় বিবেচনা করার জন্য ৭টি টিপস দেয়া হল:
. আপনার রোযা ভাঙ্গুন খেজুর এবং এক গ্লাস পানি দিয়ে: ইফতারের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপযোগী কারণ এটা শর্করা ও পুষ্টি উপাদানের পুঞ্জীভূত উস হিসেবে কাজ করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, খেজুর দিয়ে রোযা ভঙ্গ করা আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভ্যাস ছিল।সালমান ইবন আমীর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ রোযা ভঙ্গ করে, তখন সে যেন শুকনা খেজুর দিয়ে তা করে। আর যে শুকনা খেজুর না পায়, সে যেন পানি দিয়ে রোযা ভাঙ্গে। কারণ এটা বিশুদ্ধকারক। [আত তিরমিযী]
. শর্করা সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন: গোটা শস্য এবং খাদ্য শস্য বা এ ধরণের খাবার প্রয়োজনীয় ক্যালরি এবং শর্করার যোগান দেয় যা থেকে শরীর সারাদিন বঞ্চিত ছিল।স্যান্ডউইচ বানানোর জন্য লাল রুটি ব্যবহার করুন। তাছাড়া আরো খেতে পারেন পাস্তা, যদি সেটা বানানো সহজ হয়।এগুলো যোগান দেয় উপকারী পুষ্টি ও প্রচুর ভিটামিনের, আর এগলো শস্যের ভালো উস।( যা অন্ত্রের গতি নিয়ন্ত্রন করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।)
 . ইফতারের সময় ভোজোসবে মেতে উঠবেন না: সারাদিন ক্যালরি থেকে বঞ্চিত থাকার পর খাবার গ্রহণ করতে আপনার পরিপাকতন্ত্র কিছুটা সময় নেয়, তাই আস্তে আস্তে, সহজভাবে খাওয়ার ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ সমস্যার উদ্রেক করতে পারে; আকস্মিক খাদ্য গ্রহণ গ্যাস্ট্রো ইন্টেস্টিনাল সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে; এটা পাকস্থলীকে হঠা করে একসাথে প্রচুর এনজাইম নিঃসরণ করতে বাধ্য করবে, যা অস্বস্তির কারণ হবে। অতএব আস্তে আস্তে খাবার গ্রহণের কথা মনে রাখুন এবং আপনার খাবার ভালো করে চিবান।তাছাড়া খুব বেশী খাওয়া ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকেও সমীচীন নয়।
 . খাদ্য তালিকার মাঝে তরল খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করুন এবং প্রচুর তরল গ্রহণ করুন: পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করতে যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করুন।পানি বিষাক্ত পদার্থগুলোকে ধুয়ে মুছে দেয় এবং হজমে সাহায্য করে। তাছাড়া টাটকা ফলের রস শর্করা,ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের এক দারুণ উস। আপনি আরো খেতে পারেন মুরগীর স্যুপ বা ভাপে সিদ্ধ করার মুরগীর মাংস। এগুলো প্রোটিনে ভরপুর যা টিস্যু এবং পেশীতে শক্তি সঞ্চয়ে সাহায্য করে এবং শরীরকে সহজে ক্লান্ত হতে দেয় না।স্যুপ পুষ্টি এবং ইলেক্ট্রোলাইটের ভালো উস যা অবসাদগ্রস্ততা এবং পানিশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
 . তৈলাক্ত খাবার এবং ভাজা পোড়া এড়িয়ে চলুন: এধরণের খাবারগুলো হজম হতে প্রচুর সময় নেয় এবং আপনাকে এমন একটা অনুভূতি দেয় যেন আপনার পেট ভরে গেছে, কিন্তু আসলে এগুলো আপনার পুষ্টি চাহিদা মেটায় না বা আপনাকে পরিপুষ্ট করে না। এগুলো ইফতারের জন্য কোন আদর্শ মেন্যু নয়, এমনিতেও না। যাই হোক, যদি খেতেই হয়, তবে রাতের খাবারের সময় অল্প একটু খেতে পারেন।
 ৬. দ্রুত রোযা ভঙ্গ করুন: এটা কি দিয়ে রোযা ভাঙবেন সে সংক্রান্ত কিছু নয়, বরং কখন রোযা ভাঙবেন, সেটা নিয়ে। সময়মত রোযা ভঙ্গ করা রামাদ্বানের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক কারণ অপ্রয়োজনে রোযা ভাঙতে দেরী করা বাঞ্ছনীয় নয়। সাহল ইবনে সাদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনঃ মানুষ কল্যাণের মাঝে থাকবে যতদিন তারা রোযা ভাঙতে দ্রুততা অবলম্বন করে। [বুখারী ও মুসলিম]
 ৭. ইফতার ভাগাভাগি করুন:আপনি বরকত বাড়াতে পারেন আপনার প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন, অভাবী এবং অন্য যে কোন রোযাদার মুসলিমের সাথে ইফতার ভাগাভাগি করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন: যে কেউ একজন রোযাদারের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করে, তাহলে তার জন্যও রোযাদার ব্যক্তির অনুরূপ সওয়াব রয়েছে যদিও রোযাদারের সওয়াব থেকে কোনো কমতি হবে না। [ তিরমিযী ]

আরও পড়ুন, রমজান মাসের ৩০ আমল 30 Amol of Ramadan

রামাদ্বানের রোযা নফস নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদয় ও আত্মাকে নিয়মানুবর্তী করার অসংখ্য সুযোগ আমাদের সামনে এনে দেয়, আমাদের সাহায্য করে আল্লাহর আরো অনুগত হতে। এটা আমাদের শরীরের যত্ন নেয়ার এবং একে নিয়মানুবর্তী করারও সময়। যে শিক্ষাটা আত্মস্থ করতে হবে তা হল ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে, তবে একই সাথে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের শরীর সঠিক ধরণের পুষ্টি, সঠিক পরিমাণে পাচ্ছে যাতে ক্লান্তি, অবসাদ, অস্বস্তি এবং পানিশূন্যতাকে প্রতিরোধ করা যায়। রোযাদাররা যেন তাদের রোযা ঘরে  ভাঙতে পারেন এবং আপনার খাবার ও ঘরে যেন বরকত হয়, এই দুআ করি।আমীন

No comments:

Post a Comment