ইতিহাস
শুরু করার পূর্বে কিছু কথা
এখানে কিছু
ছবি ব্যবহার করা হয়েছে যে গুলো অনেকের কাছে আপত্তিকর মনে হতে পারে,পোস্টের প্রয়োজনীয়তাকে মাথায় রেখেই এই ছবি গুলো দেয়া হয়েছে।আশা করি কেউ
ভিন্ন ভাবে দেখবেন না।
পতিতা,গণিকা,বারনারী,বেশ্যা
যাই বলি-ঐ এক শ্রেণীর নারীকেই বোঝায়।যারা টাকার বিনিময়ে নিজের দেহকে অন্যের হাতে
তুলে দেয় পুরুষের ভোগ-বিলাস,আনন্দ-ফূর্তির উদ্দেশ্যে।আমাদের
সমাজ এদের ভালো চোখে দেখে না।সমাজের মানুষ গুলো নিজের মনের ক্ষুধা মেটায়,তারপর এদের ফেলে দেয় ডাস্টবিনে,আবার যখন মনে
ক্ষুধা লাগে তখন সেই ডাস্টবিন থেকে তুলে চেটে-পুটে নিজের ক্ষুধা নিবারণ করে।
ডা.লুৎফর রহমানের একটি কথা–“এই সমাজে যদি তাদের (গণিকাদের) প্রয়োজন নাই থাকতো তাহলে তারা অনেক আগেই
হরিয়ে যেত”।এই কথাটি অক্ষরে অক্ষরে ঠিক,অপ্রয়োজনীয় কোন জিনিস কখনো টিকে থাকে না।সমাজের আমি,আপনি বা আমরাই এই বৃত্তিকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছি।
জীবনভর আমার আপনার প্রয়োজন মেটানোর
পরেও সে আমার আপনার চোখে খারাপ।গণিকাবৃত্তি নিয়ে আমার এক বান্ধবী একটা কথা বলেছিল–“দেখ যদি তোরা ফ্রিতে সব কিছু পাইতি তাহলে আর খারাপ বলতি না,তখন সেবা দানকারী বলতি”।আমার কাছেও
এই কথাটি যৌক্তিক মনে হয়েছে।
এইবার
ইতিহাসের পালাঃ
বলাহয় সভ্যতার যে কয়টি পেশা আদিকাল
থেকে চলে আসছে তার মধ্যে অন্যতম হলো পতিতাবৃত্তি।মানব সভ্যতার সূচনা লগ্ন থেকেই এই
পেশা চলে আসছে।এই বার দেখা যাক কিভাবে এই পেশা আদিম পেশা এবং এর ইতিহাস কতটুকুই
প্রাচীন..
প্রাগৈতিহাসিক
যুগঃ
আমরা সবাই জানি প্রাগৈতিহাসিক কালে
মানুষ খাদ্য উৎপাদন
না করে খাদ্য সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করত।এই সময় মেয়েরা খাদ্য (ফলমূল) সংগ্রহ
করত এবং পুরুষরা শিকার করত।এই শিকারের কাজে অনেক সময় পুরুষকে অনেক দূরে যেতে হতো… যাতে তাদের দুই-চার
বা সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগত ফিরে আসতে।এই সময় পুরুষ হয়তো শিকার করতে করতে অণ্য
একটি গোত্রের কাছে চলে যেত।এই সময় পুরুষের যদি কোন নারী সঙ্গ দরকার হতো তখন ঐ
গোত্রের নারীর সাথে সে সঙ্গম করতে পারত।তবে এই সঙ্গমের বিনিময়ে তাকে শিকারের কিছু
অংশ দিতে হতো।আর এর মাধ্যমেই দেহের বিনিময়ে অর্থেরে ধারণাটি প্রচলিত হয়।নৃবিজ্ঞানীদের
মতে এখন থেকেই পতিতা বৃত্তির শুরু।
তবে প্রাগৈতিহাসিক সময় কালের
পতিতাবৃত্তি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে।অনেক নৃবিজ্ঞানীই মনে করেন প্রাগৈতিসাহিক কলে বিবাহ
প্রথা ছিল না।এই সময় মানুষ যৌনস্বাধীনতা ভোগ করত।পরবর্তীতে বিবাহ প্রথা চালু হবার
কারণে বিশেষ করে একপতত্নী দ্বারা-যেদিন থেকে ধর্ম,সমাজ ও রাষ্ট্রের মানুষের যৌন স্বাধীনতাকে খর্ব করে সেই দিন থেকেই এই
ব্যবসার জন্ম হয় বলে অনেকেই মনে করেন।
ঐতিহাসিক যুগে
গণিকাবৃত্তিঃ
প্রাচীন ব্যাবিলন,ভারতবর্ষ,গ্রীস,রোম
সহ সকল প্রাচীন সভ্যতায়ই এই বৃত্তি নানা ভাবে প্রচলিত ছিল।
ব্যাবিলনঃ
প্রাচীন ব্যাবিলনে পতিতাবৃত্তিকে পূন্যের কাজ মনে করা হতো।আর এই কারণে প্রত্যেক বাড়ি থেকেই প্রত্যেক নারীকে জীবনে অনন্তত একবার টাকার বিনিময়ে দেহদান করতে হতো।ঐতিহাসিক হেরোডেটাস তার বর্ণনায় লিখেছেন-“মাইলিত্তা (ব্যাবিলনীয়দের রতিদেবী (Mylitta) দেবীর মন্দিরে প্রত্যেক নারীকেই অন্তত একবার যেতে হতো।তারা মন্দিরে লাইন ধরে বসে থাকত।এই মন্দিরে যে সকল পুরুষ আসত তারা নিজেদের পছন্দ মতো নারীকে রৌপ্যমুদ্রা নিক্ষেপ করত এবং বলত তোমার উপর মাইলিত্তার আর্শিবাদ বর্ষিত হোক।এই কথা বলার সাথে সাথে উক্ত নারী মুদ্রা নিক্ষেপকারী পুরুষের সাথে কোন নির্জন স্থানে গিয়ে দেহ দান করত”।এই বিষয়টিকে ব্যাবিলনীয়রা ধর্মানুষ্ঠান মনে করত বলে কত টাকা দেয়া হলো সেটা বিচার করা হতো না।এখানে বিষয় হলো সুন্দর নারীরা খুব সহজেই নিজের খদ্দের পেয়ে যেত কিন্তু কুৎসিত নারীরা সহজে পেতনা।তাদের অনেক সময় দুই-তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো।আর যতদিন পুরুষের সাথে মিলিত হতে না পরত ততদিন ঘরে ফেরার নিয়ম ছিল না।হাম্বুবারীর আইনেই পতিতাদের কথা উল্লেখ আছে,তাদের অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে এই আইনে।
প্রাচীন ব্যাবিলনে পতিতাবৃত্তিকে পূন্যের কাজ মনে করা হতো।আর এই কারণে প্রত্যেক বাড়ি থেকেই প্রত্যেক নারীকে জীবনে অনন্তত একবার টাকার বিনিময়ে দেহদান করতে হতো।ঐতিহাসিক হেরোডেটাস তার বর্ণনায় লিখেছেন-“মাইলিত্তা (ব্যাবিলনীয়দের রতিদেবী (Mylitta) দেবীর মন্দিরে প্রত্যেক নারীকেই অন্তত একবার যেতে হতো।তারা মন্দিরে লাইন ধরে বসে থাকত।এই মন্দিরে যে সকল পুরুষ আসত তারা নিজেদের পছন্দ মতো নারীকে রৌপ্যমুদ্রা নিক্ষেপ করত এবং বলত তোমার উপর মাইলিত্তার আর্শিবাদ বর্ষিত হোক।এই কথা বলার সাথে সাথে উক্ত নারী মুদ্রা নিক্ষেপকারী পুরুষের সাথে কোন নির্জন স্থানে গিয়ে দেহ দান করত”।এই বিষয়টিকে ব্যাবিলনীয়রা ধর্মানুষ্ঠান মনে করত বলে কত টাকা দেয়া হলো সেটা বিচার করা হতো না।এখানে বিষয় হলো সুন্দর নারীরা খুব সহজেই নিজের খদ্দের পেয়ে যেত কিন্তু কুৎসিত নারীরা সহজে পেতনা।তাদের অনেক সময় দুই-তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো।আর যতদিন পুরুষের সাথে মিলিত হতে না পরত ততদিন ঘরে ফেরার নিয়ম ছিল না।হাম্বুবারীর আইনেই পতিতাদের কথা উল্লেখ আছে,তাদের অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে এই আইনে।
ভারতবর্ষেঃ
প্রাচীন ভারতে পুরোহিতদের প্রভাব ছিল
খুব বেশি।এই সময়ের পুরোহিতরা অনেক সময় নিজেকে দেবতার সাথে তুলনা করতেন।পুরোহিতদের
সম্পর্কে এমনও বলহয় যে- কোন নব-বিবাহিতা নারীর স্বামীর সাথে রাত কাটানোর পূর্বে
পুরোহিতের সাথে রাত কাটাতে হতো।এছাড়াও পুরোহিতরা মনে করত-স্বর্গের দেবতা ইন্দ্র সহ
অন্যান্য দেবতাদের চিত্ত বিনোদনের জন্য অপ্সরা,মেনেকা,রম্ভা অপ্সরাগণিকারা আছে,তাই পৃথিবীতেও থাকা দরকার।আর এই ধারণা থেকেই বড় বড় মন্দির,তীর্থস্থানগুলোতে দেবদাসী রাখা হতো।পুরোহিতরা মনে করত– এরা দেবতার সেবা করবে,আর দেবতার কাছে সেবা
পৌছে দেবার পথ হলো পুরোহিতকে সেবা করা।এই সকল দেবদাসীরা অনিন্দ্য সৌন্দর্যের
অধিকারী হতো।অনেক সময় এলাকার সুন্দরী নারীকে ধরে এনে দেবদাসী বানানো হতো।এই সকল
দেবদাসীদের সাথে পুরোহিতদের অবৈধ যৌনক্রিয়া চলত।অনেক সময় পুরোহিতরা মন্দিরের অর্থ
উপার্যনের লক্ষ্যে সাধারণ মানুষের সাথেও সঙ্গমের অনুমতি দিত।
কিভাবে দেবদাসী মন্দিরে আনা হতো তা
নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে-এটাও শোনা যায় যে-কোন কোন ধর্মপ্রাণ পিতা-মাতা নিজকন্যাকে
দেবতার সাথে বিয়ে দিয়ে তারা দাসী করে দিতেন।এই দেবদাসীরা দেবতার মূর্তির সামনে
নৃত্য করত।এদের স্বতীত্ত্ব রক্ষা করে চলতে হতো।যদি কোন কারণে চরিত্রে দোষ পাওয়া
যেত তাহলে মন্দির থেকে বের করে দেয়া হতো।তবে স্বাভাবিক ত্বারণায় এবং পুরোহিতের লালসার(আর্থিক/
দৈহিক)কারণে এই স্বতিত্ত্ব ধরে রাখা সম্ভব হতো না।
গ্রীসের
পতিতাবৃত্তিঃ
গ্রীক দেবী ভেনাস ও আফ্রোদিতিকে
পতিতাদের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।এই দুই জনের মূর্তি প্রকাশ্যে পূজা করা হতো।আর
এই পূজার ব্যায় ভার বহন করা হতো মন্দিরর পতিতাদের আয়ের টাকা থেকে। প্রাতি মাসের
চতুর্থ দিনে এই পূজা করা হতো।কোরিন্থ(Corinth)
মন্দির হাজারের উপর পতিতা থাকত।কারণ বাবা-মা এই সকল নারীদের
মন্দিরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন এবং পূন্য লাভের আশাই এই পতিতাবৃত্তি করত।
গ্রীসে প্রাপ্ত মদের গ্লাসের উপর
পতিতাদের চিহ্ন স্বরূপ অঙ্কিত একটি চিত্র
গ্রিক
দার্শনিক ও আইনবিদ সলোন (Solon)
। তিনি একবার আইন প্রনয়ন
করেন যে পতিতারা রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এদের আয়ের টাকা দিয়ে
আফ্রোদিতির মন্দির নির্মান ও সংস্কার করা হবে। সলোনের সময় গ্রীসের নারীরা
স্বেচ্ছায় মন্দির আসত না বিজিত অঞ্চলের সকল নারীকেই জোর করে মন্দিরে রাখা হতো
পতিতাবৃত্তির জন্য। এরা রাষ্ট্রের সম্পদ ছিল বলে তাদের যদি কোন অসুখ বিসুখ হতো
তাহলে কোন চিকিৎসা
করা হতো না। দুই একজন পতিতা ছাড়া বাকি পতিতাদের জীবন ছিল খুব কষ্টের। খদ্দের কে
আকৃষ্ট করার জন্য তারা রাস্তার পাশে নগ্ন হয়ে দাড়িয়ে থাকত। আবার অনেক সময় পথের
পাশে তারা যৌনসঙ্গমও করত খদ্দের আকৃষ্ট করার জন্য।
হেতায়ারা (Hetaira) নামে এক শ্রেণীর উঁচু
দরের পতিতা ছিল গ্রিসে। এরা ছিল গ্রিসের কবি, দার্শনিক,
সেনাপতি, রাজপুরুষের ভোগের সামগ্রী।
যেহেতু এরা প্রভাবশালী মানুষের মনোবঞ্জন করত তাই তাদের শিক্ষিত ও শৈল্পিক মনের অধিকারী
হতে হতো। এর বাসগৃহ বেশভূষা ছিল চাকচিক্যময়।
গ্রিক সভ্যতায় উপপত্নী প্রথা প্রচলিত
ছিল। এ প্রসংঙ্গ ডেমসথিনিসি (Demosthenese)
বলেন“ হেতায়রা আমাদের বিলাসিতার
জন্য,উপপত্নীরূপে,প্রতিদিন
ব্যবহারের জন্য,স্ত্রী আইন স্বীকৃত পুত্র-কণ্যার জন্য।স্ত্রী
অন্তঃপুরে অনুগত থেকে বৃদ্ধা হবে”।
উপপত্নীর গর্ভে যদি কোন সন্তান জন্ম নিত তাহলে সে কোন নাগরিক বা সম্পত্তির অধিকার পেত না।
উপপত্নীর গর্ভে যদি কোন সন্তান জন্ম নিত তাহলে সে কোন নাগরিক বা সম্পত্তির অধিকার পেত না।
রোমেঃ
পম্পেই পতিতালয়ে থেকে সংগৃহীত একটি
ফ্রেসকো
রোমের
পতিতাদের অধিকাংশই ছিল বিজিত অঞ্চলের নারীরা।রোমান সাম্রাজ্যের চরম উন্নতির সময়
নারী-পুরুষ একত্রে উলঙ্গ অবস্থায় গোসল করার প্রথা চালু হয়।এর ফলে সমগ্র ইতালি জুরে
অনেক হাম্মামখানা চালু হয়। এই হাম্মামখানা গুলো হয়ে উঠে যৌনাচারনের কেন্দ্র।রোমে
পতিতাবৃত্তি এতই প্রসার হয়েছিল যে-সাকার্স,থিয়েটার,মেলা,তীর্থস্থানগুলোতে
গণিকাতে পরিপূর্ণ থাকত।তারা স্বাধীনভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে পারত এবং তাদের
খদ্দের ধরতে পারত।দেশের সকলেই বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে
হাম্মামখান ও বারাঙ্গনা ভবনগুলোকেই বুঝত।এই সময় এই হাম্মামখানা ও বারাঙ্গানা
ভবনগুলোতে অনেক বিবাহিত পুরুষ নিজের স্ত্রীকে বিক্রি করে দিত।বড় বড় সম্রাট্রের
স্ত্রীরাও নির্জন স্থান বাড়ি ভাড়া করে সম্রাটের অজ্ঞাতে পতিতাবৃত্তি করত।সম্রাট
ক্লাডিয়াসের স্ত্রী মোনালিসা এই অপরাধে সম্রাটের আদেশে নিহত হন।
মধ্যযুগে ইউরোপের
পতিতাবৃত্তিঃ
মধ্যযুগে (৫০০-১৫০০ খ্রিঃ) সময়ে
পৃথিবীর সর্বত্রই পতিতাবৃত্তির প্রসার লক্ষণীয়।ইংল্যান্ড,ফ্রান্স,জার্মানী,আমেরিকা,জাপান প্রভৃতি দেশ শিল্পেউন্নত হয়।সৈন্যদলের উপভোগের জন্যও একদল
ভ্রাম্যমান পতিতা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছিল।ক্রুসেডের সময় এই প্রথা গড়ে
উঠলেও ক্রুসেড শেষ হওয়ার পরেও এই ব্যবসা চলতে থাকে।
ইংল্যান্ডেও অন্যান্য দেশের মতো পতিতা ব্যবসা প্রচলিত ছিল।কিন্তু এখানে রাষ্ট্রীয় কোন পৃষ্ঠপোষকতা ছিল না।মধ্যযুগে ইংল্যান্ডের পতিতালয়সমূহ সরকারী স্নানাগারসমূহে কেন্দ্রীভূত হয়।এই সময় ১৫৪৬ সালে রাজা অষ্টম হেনরী আইন করে পতিতা ব্যবসা বন্ধ করেন।কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে পতিতারা বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন।১৬৫০ সালে আইন করে আরো কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলেও গোপনে পতিতাবৃত্তি চলতে থাকে।
ইংল্যান্ডেও অন্যান্য দেশের মতো পতিতা ব্যবসা প্রচলিত ছিল।কিন্তু এখানে রাষ্ট্রীয় কোন পৃষ্ঠপোষকতা ছিল না।মধ্যযুগে ইংল্যান্ডের পতিতালয়সমূহ সরকারী স্নানাগারসমূহে কেন্দ্রীভূত হয়।এই সময় ১৫৪৬ সালে রাজা অষ্টম হেনরী আইন করে পতিতা ব্যবসা বন্ধ করেন।কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে পতিতারা বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন।১৬৫০ সালে আইন করে আরো কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলেও গোপনে পতিতাবৃত্তি চলতে থাকে।
ফ্রান্সে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে
পতিতাদের এমন একটি চিত্র
অষ্টাদশ
শতাব্দীতে ফ্রান্সের অধিবাসীদের সাথে ইংল্যান্ডের অধিবাসিদের মেলামেশার করাণে
ফরাসী রীতিনীতি ইংল্যান্ডের ফ্যাশন হয়ে দাড়ায়।এবং ফরাসীদের অবাদ যৌনাচারণের প্রভাব
ইংল্যান্ডেও পড়তে থাকে।লন্ডনের French Quarter
এ পতিতাদের অড্ডা খানায় পরিণত হয়।এই সময় থিয়েটারগুলোতেও পতিতাদের
আধিপত্য লক্ষ্যকরা যায়।এখানেও তারা যৌনব্যবসা করত।এছাড়াও সমুদ্রবন্দরগুলোতেও
পতিতাদের ভীর লক্ষ্য্ করার মতো ছিল।এই সময় নাবিক ও সৈনিকদের মধ্যে যৌন জনিত রোগ
ভয়াবহ আকারে দেখা দিলে ১৮৬২ সালে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।এই কমিটি পতিতাদের
হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য পরামর্শ দেয়।১৮৬৪ সালে আইন করে পতিতাদের চিকিৎসার
ব্যবস্থা করা হয়।
জাপানের
পতিতাবৃত্তিঃ
জাপানী পতিতাদের একটি প্রতিচিত্র
সপ্তদশ
শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত জাপানে গণিকাবৃত্তি অসংঘবদ্ধ ছিল।এই সময় পতিতারা এই এলকা
থেকে অন্য এলকাতে ঘুড়ে বেড়াত।এই শতাব্দীতে পতিতা গুলোকে একত্রি করার চেষ্টা করা
হয়।ইয়োডো অঞ্চলে অনেক পতিতাকে একত্রিত করা হয়।এবং এই সময় হতেই এই ব্যবসা লাভ জনক
ব্যবসায় পরিণত হয়।১৬১২ সালে একটা স্থায়ী কেন্দ্রের জন্য আবেদন করা হয় এবং ফুকিয়া মাচি
এলাকাতে জঙ্গলাকীর্ণ একটি স্থান দেয়া হয়।পতিতারা এখানে অনেক টাকা-পয়সা ব্যয় করে
একটি সুন্দর শহর গড়ে তোলেন এবং এর নাম করণ করা হয় য়োশিওয়ারা।এর ৩০ বছর পর সরকার এই
এলাকাটি খালি করার নিদের্শ দেন এবং পরবর্তীতে সরকার এই অঞ্চলের পাশেই আরেকটি জায়গা
বরাদ্দ করেন পতিতাদের জন্য।১৮৭২ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলেই তারা পতিতা ব্যবসা করে।জাপানের
পতিতাদের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল তারা ইচ্ছে করলেই সমাজে ফিরে যেতে পারত এবং
সমাজও তাদের স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করত।এছাড়া যে সকল পতিতা সমাজে ফিরে আসত সরকার
তাদের চাকুরীর ব্যবস্থা করত।
বাংলাদেশের পতিাতবৃত্তিঃ
বাংলাদেশের পতিতালয়ের বিকাশ ঘটে মূলত
ইংরেজদের সময় থেকেই।এই সময় ইংরেজ বণিকগন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বাণিজ্য করতে
যেত।এই সময় তারা তাদের মনো রঞ্জনের জন্য পতিতা সাথে রাখত।এছাড়া ঐসময়
বাণিজ্যকেন্দ্র গুলোর আশে পাশে পতিতালয় গড়ে উঠে।বিশেষ করে নৌ-পথ বা সমুদ্র-পথের
কাছা কাছি পতিতাপল্লী দেখা যায়।বর্তমানে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোন ভ্রাম্যমান পতিতাবৃত্তি
নিষিদ্ধ।তবে যদি কোন ভ্রাম্রমান পতিতাকে আটকানো হয় তাহলে তার শাস্তি হলো ৫০ টাকা
জরিমান অথবা ৭ দিন কারাদন্ড।বাংলাদেশে মোটামুটি বৃহৎ পরিসরে পতিতালয় আছে
১৪টি।এই পতিতালয় গুলো বাণিজ্যিক অঞ্চলের আশেপাশেই অবস্থিত।
পতিতাবৃত্তি একটি সমস্য,এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।কিন্তু একবার ভেবে দেখা দরকার কেন এই পেশা এখনো
টিকে আছে।এই পেশেকে টিকিয়ে রাখার জন্য দায়ী কে?এই
প্রশ্নের উত্তরই বলে দিবে এটা কি প্রয়োজন আছে নাকি নাই।
সহায়ক পাঠ-
যৌন বিজ্ঞান- আবুল হাসানাৎ ও ডা. গিরীন্দ্রশেখর বসু।
Sex in Civilization – V.F. Calverston (এর ছোট একটি অংশ)
ছবিগুলো নেয়া হয়েছে Wikipedia থেকে
যৌন বিজ্ঞান- আবুল হাসানাৎ ও ডা. গিরীন্দ্রশেখর বসু।
Sex in Civilization – V.F. Calverston (এর ছোট একটি অংশ)
ছবিগুলো নেয়া হয়েছে Wikipedia থেকে
No comments:
Post a Comment